35.3 C
Saidpur

সত্য প্রকাশে সাহসী

রবিবার, মার্চ ১৬, ২০২৫

ইভটিজিং এর প্রতিবাদ করায় বৃদ্ধ দাদীকে মারধোর

চিকলী নিউজ : নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় করুণ পরিণতির রূপ পেল ১১ বছরের একটি কিশোরী মেয়ের ইভটিজিং, ঘটনাকে কেন্দ্র করে। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম  শ্রেণীতে পড়ুয়া এক মা হারা মেয়েকে  দীর্ঘ দিন থেকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় মেয়েটির বাবা ও বৃদ্ধ দাদীকে বেধড়ক মারপিট করেছে বখাটেরা।

বখাটে ও তাদের পরিবারের লোকজনের সংঘবদ্ধ হামলায় গুরুত্বরভাবে জখম হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি। অথচ তিনদিন পর তাদের বিরুদ্ধেই উল্টো ভাঙ্চুর ও লুটপাটের মামলা করেছে নির্যাতনকারীরা।

এতে দাদী-বাবা-মেয়ের কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে হাসপাতাল ও বাড়ির পরিবেশ।

এই ঘটনায় ৩ দিন পর গত শনিবার (১৩ মে) মামলার প্রেক্ষিতে প্রধান আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও অন্যান্য আসামীরাসহ নানা পক্ষ থেকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে ভুক্তভোগীর পরিবারকে।

মামলা তুলে না নিলে পাল্টা মামলায় ফাঁসিয়ে শিক্ষা দেয়া হবে বলে প্রতিনিয়ত হয়রানী করা হচ্ছে। ফলে তারা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় আতংকে দিনাতিপাত করছে। পুলিশ বাকি আসামীদের গ্রেফতারে গড়িমসি করায় তারা বীরদর্পে ঘুরছে বলে অভিযোগ মিলেছে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, শহরের গার্ডপাড়া মহল্লার মো. সনুর ছেলে মো. সাকিব ওরফে আপেল (২২) দীর্ঘ দিন থেকে অশ্লীল কথা বলে ও অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে স্কুলছাত্রীটিকে ইভটিজিং করে আসছে। স্কুলে যাওয়া-আসার সময় প্রায়ই এভাবে উত্যক্ত করায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে।

এরই মাঝে গত ১১ মে বেলা সাড়ে তিনটায় স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় সৈয়দপুর পাইলট বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের দক্ষিণের গলিতে জনৈক পারভেজের বাসার সামনে অতিমাত্রায় উত্যক্ত করে। এতে মেয়েটি পরদিন স্কুলে যেতে অনিহা প্রকাশ করে এবং রাতে তার দাদীকে সব খুলে বলে। এতে দাদী তাৎক্ষণিক নাতনী কে নিয়ে আপেলের অভিভাবককে বিষয়টি জানাতে তাদের বাড়িতে যায়।

এসময় আপেল মেয়েটি দাদীকে অকথ্য গালিগালাজ করলে তিনি মোবাইলে মেয়েটির বাবাকে জানায়। মায়ের কথায় ছেলেও দ্রুত ওই বাড়িতে ছুটে যায়। বাড়ির সামনে পৌঁছামাত্র আপেলসহ তার সহযোগী অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজন ছেলে মেয়ের বাবাকে এলোপাথাড়ি কিলঘুসি মারতে থাকে। মেয়ের দাদী এগিয়ে গেলে তাকেও মারপিট করে। পরে এলাকাবাসী রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের উদ্ধার কর

এঘটনায় ১৩ মে সৈয়দপুর থানায় এজাহার করা হয়। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ আপেলকে গ্রেফতার করে। কিন্তু অজ্ঞাত আসামীদের কাউকেই গ্রেফতার করতে পুলিশ গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ করছেন মেয়েটির পরিবার।

তারা বলেন, মারামারির ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট উপস্থিত একজনকে আটক করে থানায় খবর দিলেও পুলিশ আসেনি। ফলে মারপিটে অংশগ্রহণকারী আসামীরা বেপরোয়া হয়ে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে চাপ দিচ্ছে। না হলে আবারও মারধর করাসহ প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে।

তাছাড়া মামলা তুলে না নিলে পাল্টা করা ভাঙ্চুর ও লুটপাটের মামলা আটক করা হবে বলে এলাকার প্রভাবশালীদের নানাভাবে হয়রানী অব্যাহত আছে বলেও অভিযোগ করেছে মেয়েটির পরিবার।

এতে ভুক্তভোগী শিশু শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তারা এব্যাপারে প্রশাসন, মানবাধিকার সংগঠন ও মিডিয়ার সহযোগীতা কামনা করেছেন। সেইসাথে সকল আসামীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবী জানিয়েছেন। নয়তো বাচ্চা মেয়েটির জীবন অঙ্কুরেই নষ্ট হবে। এতে পুরো পরিবারটি আতঙ্কের মধ্যে দিনাতিপাত করছে।

এব্যাপারে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল

ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ামাত্রই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এবং এজাহার নামীয় আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অজ্ঞাতদের সনাক্ত করে গ্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। দ্রুততম সময়েই এইক্ষেত্রে অগ্রগতি হবে।

পাল্টা মামলার ব্যাপারে তিনি বলেন, সবারই মামলা করার অধিকার আছে। তবে তদন্তে যারা দোষী সাব্যস্ত হবেন, তাদের বিরুদ্ধেই যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

- Advertisement -spot_img

আরও খবর

আপনার মন্তব্য:

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

- Advertisement -spot_img

সদ্যপ্রাপ্ত

জাতীয়