চিকলী নিউজ : দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানা নীলফামারীর সৈয়দরুরে বেতন ভাতা প্রদানের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছে ওই কারখানার শ্রমিক কর্মচারীরা। গতকাল সকাল থেকে শ্রমিক ও কর্মকর্তারা নিজ নিজ কাজ বন্ধ রেখে এই কর্মসূচি পালন করেছে। এতে কারখানার উৎপাদনসহ সকল কর্মকান্ডে বন্ধ হয়।জানা যায়, বিগত কয়েকমাস ধরে নির্ধারিত সময়ে মজুরী পাচ্ছেনা বলে বাধ্য হয়ে এই পথ বেছে নিয়েছেন। শ্রমিকরা জানান, চলতি মাসের ৫ তারিখ পেরিয়েও গেলেও আগস্ট মাসের বেতন তারা এখনো পাননি। বেতন না পেয়ে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন তারা। ২২ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত এবং কর্মকর্তারা ১ থেকে ৫ তারিখের মধ্যে বেতন ভাতা দেওয়ার কথা। কিন্তু তারা নির্ধারিত সময়ে বেতন পাচ্ছেন না। ফলে স্বাভাবিক ব্যয় নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়েছে।
ওই কর্মসূচিতে শ্রমিক কর্মচারীদের সাথে কর্মকর্তারাও একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। এমনকি কারখানার বাইরে ও ট্রাফিক বিভাগ, রেলওয়ে স্কুল, হাসপাতালসহ সৈয়দপুর রেলওয়ে বিভাগের অন্যান্য অফিসসমুহের চাকুরীজীবিরাও এই ভোগান্তিতে পড়েছেন।সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ক্যারেজ সপের কর্মচারী শহিদুল ইসলাম বলেন, পূর্বে প্রতিমাসে বেতনের টাকা নির্ধারিত সময়ে একাউন্টে আসে, এখন কয়েক মাস ধরে তা বিলম্ব হচ্ছে। এ মাসের বেতন এখনো আসেনি। একারণে নির্ধারিত সময়ে শ্রমিক কর্মচারীরা কাজে যোগ দেয়নি। তিনি বলেন, রেলওয়ে একাউন্টস অফিসের কারণে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে রেলওয়ে কারখানার কর্ম ব্যবস্থাপক (ডাব্লুএম) শেখ হাসানুজ্জামান বলেন, কর্মবিরতির কোন খবর আমার জানা নেই। তারা অফিসিয়ালী কোন কর্মসূচী দেয়নি বা আমার কাছেও কেউ আসেনি। তাই এ ব্যাপারে আমাদের কোন বক্তব্য নেই। শ্রমিকরা বেতন ভাতা কেন নির্ধারিত সময়ে পাচ্ছেন না তা বলতে পারবেন রেলওয়ে একাউন্টস বিভাগ। সৈয়দপুর রেলওয়ের হিসাব বিভাগের (কারখানা) কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, সরকারী নতুন নীতিমালা অনুযায়ী বাংলাদেশ রেলওয়ের হিসাব বিভাগের সৈয়দপুর, লালমনিরহাট, পাকশী, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও পাহারতলী বিভাগের একাউন্টস অফিস সমুহের কোন কার্যকারীতা বর্তমানে নেই। তাই এই অফিসগুলোর অন্তর্ভুক্ত সকল ওয়ার্কসপ, ওপেন লাইন ও অফিসসমুহে কর্মরত ব্যক্তিদের বেতন ভাতাসহ সকল প্রকার হিসেব সংক্রান্ত কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। সরকারের এ নীতিমালা বাতিলের দাবিতে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে কলম বিরতি কর্মসূচী পালন করছে হিসাব বিভাগের কর্মচারীরা। ফলে বেতন-ভাতা সংক্রান্ত জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার শ্রমিকলীগ সভাপতি, সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভ্পাতি মোঃ মোখছেদুল মোমিন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। এখানে একাউন্টস অফিস যে বাজেট বরাদ্দ না পাওয়ার কথা বলছেন তা আদৌ সঠিক নয়। তারা নিজেরা কর্মবিরতি করায় বেতন বিল তৈরীতে অবহেলার কারণে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।