26.3 C
Saidpur

সত্য প্রকাশে সাহসী

রবিবার, মার্চ ১৬, ২০২৫

বৃদ্ধাশ্রমে ঈদ করা এক বাবার গল্প

চিকলী ডেস্ক নিউজ : ঈদের দিন দুপুর ২টা। স্থান রাজধানীর আগারগাঁওয়ের প্রবীণ নিবাস। ভবনের ছয় তলায় উঠে কিছুটা বামে গেলেই ৬০৫ নম্বর রুম। দরজা খোলা দেখে ‘কেউ আছেন’ বলতেই উত্তর এলো, ভেতরে আসেন। ভেতরে গিয়ে দেখা মিলল শেখ মুজিবুল হকের। তিনি ঢাকা কুরিয়ারে (ইংরেজি সাপ্তাহিক পত্রিকা) কলাম লিখতেন। ছিলেন রাজধানীর একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষক।

স্ত্রী-সন্তানদের থাকার জন্য ৯১ লাখ টাকা দিয়ে রাজধানীতে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন মুজিবুল হক। কিন্তু সেখানে তিনি থাকেন না। গত ২০ বছর ধরে একা একা থাকেন আগারগাঁওয়ের প্রবীণ নিবাসে। মাঝে মাঝে তার স্ত্রী-সন্তানরা এখানে আসেন দেখা করতে।

নিজের ফ্ল্যাট থাকার পরও বৃদ্ধাশ্রমে থাকার কারণ জানতে চাইলে মুজিবুল হক বলেন, ‘আমি এখানে আমার নিজের ইচ্ছাতেই আছি। এখানে আসার পেছনে আমার কোনো রহস্য নেই। আমার এখানে একা থাকতে ভালো লাগে।’

একা একা ঈদ করতে ভালো লাগে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ভালোই লাগছে। সকালে গোসল করে সাদা পাঞ্জাবি পরেছি, সেমাই খেয়েছি। দুপুরে সবার সঙ্গে ডাইনিংয়ে বসে বিরিয়ানি খেলাম। ঈদের সময় আলাদা করে পরিবারের কথা মনে পড়ে না। কারণ তারা সব সময় আমার মনের মধ্যেই থাকে।

ঈদের দিন কারও সঙ্গ পেলে ভালো লাগত না? জিজ্ঞেস করলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন মুজিবুল হক। বলেন, কেউ যদি অহমিকা প্রকাশ করে, তাহলে আমি কিছু করতে পারব? আমি আমার পরিবারকে ৯১ লাখ টাকা দিয়ে একটা অ্যাপার্টমেন্ট করে দিয়েছি। তারা সেই অ্যাপার্টমেন্টে আছে। আমি ওই পরিবারের প্রধান ছিলাম। আমি এখানে আমার নিজের ইচ্ছাতেই চলে এসেছি।

এদিকে ২০১৭ সাল থেকে মিরপুরের পাইকপাড়া চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারে আছেন ৩২ বছর শিক্ষকতা করা মোহাম্মদ সেলিম। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরিবারের কথা মনে পড়ে। কিন্তু তাতে কী! তারা তো আর খোঁজ খবর নেয় না। আমার মেয়েরা সিটি কর্পোরেশনে চাকরি করে। এখানে থাকতে আমার কোনো অসুবিধা হয় না, আমি অনেক ভালো আছি।

শুধু মুজিবুল হক ও মোহাম্মদ সেলিম নন। এই ওল্ড এজ সেন্টার ২টিতে আছেন এমন অনেক মানুষ। যাদের মধ্যে কেউ কেউ সব থাকার পরও নিজ ইচ্ছায় ঘর ছেড়েছেন। আবার কেউ কেউ ঘর ছেড়েছেন বাধ্য হয়ে।

- Advertisement -spot_img

আরও খবর

আপনার মন্তব্য:

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

- Advertisement -spot_img

সদ্যপ্রাপ্ত

জাতীয়