21.2 C
Saidpur

সত্য প্রকাশে সাহসী

রবিবার, মার্চ ১৬, ২০২৫

গুগলের ইঞ্জিনিয়ার হলেন নীলফামারীর রোমেল

নীলফামারী : সময়টা ২০০৬ সাল। ঢাকা কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে অনার্স শেষ করেন রোমেল। নীলফামারীর ছেলে রোমেল শাহারিয়ার। অনার্স পাশ করার পর সিএ করতে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে গিয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে ডিপ্লোমা শেষ করেন ২০১২ সালে। বেশ কয়েকটি আইটি কোম্পানিতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি সফলভাবে শেষ করেন বিভিন্ন আইটি প্রফেশনাল কোর্স।

এবার রোমেল সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দিচ্ছেন বিশ্বের সর্ববৃহৎ সার্চ ইঞ্জিন ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগলে। গত ১০ অক্টোবর তাকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। আগামী ১ নভেম্বর ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত গুগলের হেড অফিসে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে লকার প্রজেক্টে যোগ দেবেন তিনি।

নীলফামারী সদর উপজেলার প্রগতি পাড়ায় বেড়ে ওঠা রোমেলের। বাবা ডা. সৈয়দুল আলম মারা গেছেন রোমেলের যখন ৭ বছর বয়স। দুই ভাই-বোনের মধ্যে রোমেল ছোট। বাবা মারা যাওয়ার পর নীলফামারী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীনের কাছে বড় হন তিনি। ১৯৯৯ সালে নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০০১ সালে ঢাকা কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পড়াশোনা শেষ করে স্টুডেন্ট ভিসায় চলে যান লন্ডনে সিএ পড়তে।

কিছুদিনের মাথায় ডিভি লটারির মাধ্যমে সস্ত্রীক পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে প্রথমে পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে ডিপ্লোমা শেষ করে ২০১২ সালে অটোমেশন টেস্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ শুরু করেন ডাইরেক্ট টিভি নামে একটি গণমাধ্যমে। এরপর থেকে চাকরির পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন রোমেল।

আইটি প্রফেশনাল হিসেবে বিভিন্ন কোর্স সম্পন্ন করেন তিনি। রোমেল শাহারিয়ার বলেন, আমার এ জার্নিটা সহজ ছিল না। এর পেছনে ছিল অনেক ত্যাগ, কঠোর পরিশ্রম আর ডেডিকেশন। আমি আসলে কখনো চিন্তা করিনি গুগলে আমার মতো নন সিএসই ব্যাকগ্রাউন্ডের ছেলে জব পাবে। বাংলাদেশের যে গুটিকয়েক ছেলে গুগলে জব করছে তারা সবাই বুয়েটের ছাত্র।

রোমেল শাহারিয়ার বলেন, এ চাকরির জন্য আমার চার রাউন্ডে পরীক্ষা নেওয়া হয়। আমাকে উচ্চমানের ছাত্রদের সঙ্গে কম্পিটিশন করতে হয়েছে। যাদের সবাই সিএসইর ছাত্র। সবচেয়ে মজার ছিল ফাইনাল রাউন্ড বা প্যানেল ইন্টারভিউ। মোট ৫ জন মিলে আমার ইন্টারভিউ নেয়। যার প্রশ্নগুলো সবই ছিল সিনারিও বেসড সমস্যা সমাধান। মোট ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট চলে সেই ইন্টারভিউ।

আমার জীবনের এটা ছিল বেস্ট ইন্টারভিউ। যার ফল পরের সপ্তাহে আমি পেলাম। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে মানবিক বিভাগের ছেলে মেয়েরা কখনো ডাক্তার হতে পারে না। সেই সিস্টেমই নেই, ঠিক তেমনি কমার্সের ছেলে মেয়েরা বুয়েটে পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতা রাখে না। কিন্তু বিদেশে সেটা কাজ করে না যদি আপনার যোগ্যতা থাকে আপনি ইচ্ছা করলে ডাক্তারি পড়তে পারবেন আর আমার মতো কমার্স ব্যাকগ্রাউন্ড হয়েও কম্পিউটার বিজ্ঞানে পড়াশোনা করতে পারবেন।

যদি আপনি পরিশ্রম করতে পারেন। এখানে আপনার দক্ষতা আগে দেখা হবে তারপর সার্টিফিকেট। নীলফামারী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন রোমেলকে নিজের সন্তানের মতো করেই বড় করেছেন। তার এই সাফল্যে তিনি খুবই আনন্দিত।

তিনি বলেন, রোমেল ছোটবেলা থেকেই খুবই মেধাবী ছিল। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে পড়াশোনা করলেও তার নিজস্ব চেষ্টায় সে যে অসাধ্য সাধন করেছে তা প্রশংসনীয়।

- Advertisement -spot_img

আরও খবর

আপনার মন্তব্য:

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

- Advertisement -spot_img

সদ্যপ্রাপ্ত

জাতীয়