চিকলী নিউজ : নীলফামারীর বিপুল পরিমাণ মূল্যবান সম্পদ অযত্ন আর অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দিন দিন বেদখল ও চুরি হচ্ছে এসব । এমনটি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাঁরা বলেন, রেলের সম্পদ এভাবে নষ্ট হলেও কোনো মাথা ব্যথা নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। তবে রেল কর্তৃপক্ষ জানান, জনবল সংকটের কারণে সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে রেলওয়ে আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সৈয়দপুর রেলপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৮৭০ সালে সৈয়দপুর গড়ে ওঠে রেলওয়ে কারখানা। এ কারখানায় ৭ টি গেট দিয়ে রেলের বগি (ওয়াগন) মেরামত কাজে আনা-নেওয়ার জন্য রেললাইন স্থাপন করা হয়। এ গেটগুলোর মধ্যে ৩ টি গেট দিয়ে বগি আনা-নেওয়া বন্ধ রয়েছে। স্টেশন থেকে দক্ষিণে রেলওয়ে মাঠের পাশে, উত্তরে রেলওয়ে কারখানা পাশ দিয়ে গোলাহাট কবরস্থান পর্যন্ত, ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ (ডিজেল) এর কার্যালয়ের পেছন থেকে রেলওয়ে কারখানা পর্যন্ত প্রায় ১৫২৪ মিটার রেললাইন পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে এসব রেললাইন ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট এবং চুরি হয়ে গেছে লোহা ও কাঠের প্রায় ২০৫০টি স্লিপার। পরিত্যক্ত এসব রেললাইন ও স্লিপারের মূল্য আনুমানিক প্রায় অর্ধ কোটি টাকা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, অযত্নে পড়ে থাকায় রেললাইনগুলোতে মরিচা পড়েছে। জঙ্গলে ঢাকা পড়েছে রেললাইন। দুই রেললাইনের মাঝে বেড়ে উঠছে গাছ। চোখে পড়েনি একটি স্লিপারও। কিছু এলাকায় রেললাইনের বেশ কয়েকটি বড় পাতও নেই। আর কিছুদিন থাকলে হয়তো সবগুলোই উধাও হয়ে যাবে।
ইসলামবাগ বড় মসজিদ এলাকার বাসিন্দা ইলিয়াস হোসেন নামের এক শিক্ষক বলেন, রেলওয়ে গেট বাজার যাওয়া আসার পথে দেখি রেললাইনের স্লিপার ও পিন যে যার মতো করে নিয়ে যাচ্ছে। দেখে মনে হবে এ যেন বাপ-দাদার সম্পত্তি। তাঁদের বাধা দেওয়ার কেউ নেই।
সৈয়দপুর রেলওয়ে শ্রমিক লীগ কারখানা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন বলেন, পরিত্যক্ত রেললাইন ব্যবহার উপযোগী করলে কিংবা সেগুলো নিলামে বিক্রি করলে রেলের বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় হবে।
সৈয়দপুর রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) সুলতান মৃধা আজকের পত্রিকাকে জানান, জনবল কম থাকায় আমরা অনেকটা অসহায়। তাই বিপুল পরিমাণ রেলের এ সম্পদ সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা আমাদের পক্ষে বেশ কঠিন। ইতিমধ্যে পরিত্যক্ত রেললাইনের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে তা জানানো হবে।