চিকলী নিউজ : নীলফামারী সৈয়দপুর মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে আপন খালাতো ভাই।। সৈয়দপুর উপজেলার কুন্দল পশ্চিমপাড়া, মোঃ শাহা আলম।
পেশায় ব্যবসায়ী মোঃ শাহা আলম সৈয়দপুর কুন্দল (পশ্চিমপাড়া) তার নিজস্ব বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য মোঃ শাহা আলম বলেন, আমার খালাতো ভাই মোঃ মাসুদ আলী আপন খালাতো ভাই। সে একজন কর্মহীন মানুষ হলেও স্ত্রীর টাকায় সুদের ব্যবসা করে এবং চেইন মাদকসেবী। এ ব্যাপারটি জানার পর আমি তাকে এই মাদক সেবন থেকে সরে আসতে মানা করি, তাকে বলি যে তোমার স্ত্রী ডাক্তার শামীমা আক্তার সোহাগী সৈয়দপুরে নামিদামি একজন ডাক্তার। আর তুমি পুরোপুরি বেকার। যেকোনো সময় মাদক সেবন করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পরলে তোমার স্ত্রীর সম্মানহানি ঘটবে। তোমাকে তো সমাজে কেউ চিনে না। আর এমনটা হলে আমারও আমাদের পরিবারের সম্মানহানি ঘটবে। আমার বাবা মরহুম গমির উদ্দিন সৈয়দপুর শহরের নতুন বাবু পাড়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ছিলেন।
শিক্ষক পিতার আদর্শ ধারণ করেই সমাজে বেড়ে উঠেছি। সেজন্য স্বভাবগত কারণেই আমি অন্যায় বিরোধী। আমার এমন কথায় মোহাম্মদ মাসুদ আলী প্রতিবাদ করে বলে যে তুমি তোমার মান সম্মান আমাকে দেখাচ্ছ, তোমার মান ইজ্জত ধুলাই মিশিয়ে দিতে আমার মাসুদ আলীর চুটকির কাজ। তার সঙ্গে এসব কথাবার্তা নিয়ে তর্ক বিতর্কে সে বলে তুমি জানো আমার শ্যালক রোকনুজ্জামান রোকন পুলিশের এসপি। এমন ব্যবহারে তার সঙ্গে দীর্ঘদিন কথাবাত্রা বলা বন্ধ ছিল। তিনি বলেন এর আগে সে আমাকে ধলা গাছ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নৈশ প্রহরী পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২ লাখ টাকা নেয় এবং প্রায় আমার কাছে টাকা পয়সা চায়।
তিনি বলেন সে আমার কাছে চাকরির ব্যাপারে আরও টাকা পয়সা চায়। তখন আমি তাকে জানাই আমি একটি মোটরসাইকেল কিনব এই মুহূর্তে তোকে টাকা দিতে পারবো না। সে খুব জোর করলে তাকে একবার ৩ হাজার ও ২ হাজার মোট ৫ হাজার টাকা আবারো দেই। এর কয়েকদিন পর ৭ সেপ্টেম্বর মাসুদ আলী আমার মেসেঞ্জারে একটি লাল রঙ্গের ইয়ামাহা ফিজার ১৫০ সিসির মোটরসাইকেলের ছবি পাঠিয়ে বলে যে এই গাড়িটি যশোর সদর থানায় নিলামে বিক্রি হওয়া। তুমি এটা কিনতে চাইলে আমি ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় নিয়ে দিতে পারবো। শো রুমে এই মোটরসাইকেলের মূল্য তিন লাখ ৫ হাজার টাকা। আমি মাসুদের কথা বিশ্বাস করে মোটরসাইকেলটি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করি। আমার এ কথা শুনে সে আমার সাথে সৈয়দপুর নিমবাগান ইকরা মাদ্রাসার সামনে আমার নির্মাণাধীন ভবনে দেখা করে এবং বলে যে তুই গাড়ি নিতে চাইলে আমার পুলিশ বন্ধু জাকির হোসেন মিলনকে এখনই বিশ হাজার টাকা পাঠাতে হবে। তখন আমার মোবাইলে থাকা নগদ একাউন্ট থেকে মাসুদ নিজে আমার মোবাইল থেকে মিলনের কাছে ২০ হাজার টাকা পাঠাই। আর বলে যে ২-৩ দিনের মধ্যে তুমি গাড়ি পেয়ে যাবে।
গাড়ি পাওয়ার পর অবশিষ্ট টাকা দিতে হবে। এদিকে টাকা দেওয়ার পরেই দিনে মাসুদ বলে যে তোর গাড়ি চলে এসেছে। গাড়িটি দিনাজপুর এস,আর পরিবহন অফিসে আছে। সেখানে গিয়ে বাকি এক লাখ টাকা দিলেই তুমি গাড়ি হাতে পেয়ে যাবে। সেখানে মিলন বসে থাকবে। আমি তার কথামতো দিনাজপুর এস আর পরিবহন অফিসে গিয়ে মিলনের খোঁজ করি। মিলনকে না পেয়ে আমি মাসুদকে ঘটনা জানাই মোবাইল ফোনে। মাসুদ আমাকে বলে এখানে মিলন নেই কিন্তু তার লোক নুর আলম বসে আছে। নুর আলমের নাম্বারে কন্ডিশন দেওয়া আছে তাকে টাকা দিলেই গাড়ি দিয়ে দিবে। গাড়ির কাগজপত্র দেখে আমার নজরে আসে এটি দিনাজপুরের গাড়ি। যশোর থানা নিলামের কোন কাগজ গাড়িতে নেই
এমন অবস্থায় আমার মনে সন্দেহ সৃষ্টি হলে আমি মাসুদকে আবারো ফোন করি, তখন মাসুদ বলে কাগজপত্র দেখার দরকার নেই, তুমি টাকা দিয়ে গাড়িটি নিয়ে আসো। পরে তার বন্ধু মিলনকে ফোন দিলে মিলনও বলে ওগুলো সমস্যা না, তোমার নামে ডিজিটাল কাগজপত্র করে দেওয়া হবে। শাহা আলম বলেন ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ নুর আলম সহ এস,আর পরিবহনে টাকা জমা দিয়ে সৈয়দপুরে গাড়ি নিয়ে আসি। তিনি বলেন প্রযুক্তিগতভাবে তার ভাই মাসুদ সে নিজেই অনলাইনে গাড়ির কাগজপত্র যাচাই করে, আমাকে বলে যে গাড়ির সব কাগজ ঠিক আছে। কিন্তু অনলাইনে চেক করতে গিয়ে গাড়ির মূল মালিকের ম্যাসেঞ্জারে মেসেজ চলে যায়।
মোবাইলে মেসেজ পাওয়ার পর মূল মালিক ১২ সেপ্টেম্বর সৈয়দপুরে আসে। এই গাড়ির মালিকের সঙ্গে আশুলিয়া থানার দারোগা, উপ পুলিশ পরিদর্শক, জাহাঙ্গীর ও একজন কনস্টেবল, মালিকপক্ষের আরো দুইজন, একজন চালক সহ ছয় জন আসে। ঐদিন ঐ রাতে তারা ইয়ামাহা শোরুমে যায়। মোটরসাইকেলের মূল মালিক সৈয়দপুরে আসার খবর তার খালাতো ভাই মাসুদ জানলেও সে আমাকে এ ব্যাপারে কিছুই জানায়নি। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সকালে আমাকে ফোন দিয়ে বলে যে তোর গাড়ি ঠিক হয়ে গেছে। তুই এখন শোরুম থেকে গাড়ি নিয়ে আয়। আমি মাসুদের কথা মতো শোরুমে গাড়ি আনতে গেলে সেখানে থাকা পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করে আশুলিয়া থানায় নিয়ে যায়। এরপর আদালতের মাধ্যমে আমাকে কেরানীগঞ্জ জেল হাজতে পাঠায়। আমি দীর্ঘদিন হাজত বাস করে, হাইকোর্ট থেকে পরবর্তীতে জামিনে মুক্ত হই।
তিনি বলেন বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য ও লোক মুখে জানতে পারি সরকারপাড়ার অধিবাসী মাসুদের বন্ধু ঠাকুরগাঁও জেলার সীমান্ত এলাকা হরিপুর থানার পুলিশ কনস্টেবল জাকির হোসেন মিলন ও মাসুদ আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল সক্রিয় সদস্য এবং তারা দুজনেই মাদকাসক্ত। নেশার টাকা জোগাড় করতে তারা এইসব অপরাধমূলক কাজ করে থাকে। তাকে মানসম্মানের ক্ষতি করার ব্যাপারে উপদেশ দিতে যে তর্ক-বিতর্কের সে আমার উপর মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে মাসুদ প্রতিশোধ নিতে এই জঘন্য মামলায় আমাকে ফাঁসাই।
বর্তমানেও পুলিশ কনস্টেবল জাকির হোসেন মিলন ও মাসুদ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন লোককে বলে বেড়াচ্ছে আমাকে আরো কঠিন মামলার আগামী দিনে ফাঁসাবে। যাতে আমি কোনোভাবেই বের হয়ে আসতে না পারি। এরকম হীন ষড়যন্ত্রে আমি ও আমার পরিবার প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।