নীলফামারী প্রতিনিধি : শারমীন আকতার ঝিনুক ওরফে ঝিনুক সওদাগর নামে এক তরুণী নারী থেকে পুরুষে রূপান্তর হয়েছেন। বর্তমানে তার নাম জিবরান সওদাগর (৩০)।
অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নারী থেকে পুরুষে রূপান্তর হওয়ার পরে চাকরিতে যোগদান করতে পারছেন না জিবরান। ঝিনুক সওদাগরের বাড়ি চট্টগ্রামে এবং চাকরি করতেন দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার একটি শপে।
নারী থেকে পুরুষ হওয়া জিবরান বলেন, ২০২১ সালে তিনি ভারত থেকে স্তন ও জরায়ু কেটে ফেলা এবং পুরুষাঙ্গ পুনঃস্থাপনসহ মোট তিনটি বড় অস্ত্রোপচার করেছেন। এতে খরচ হয়েছে প্রায় সাত লাখ টাকা। তবে চাকরির কাগজপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্টসহ বিভিন্ন নথিতে জিবরান এখনও শারমিন আক্তার ঝিনুক নামেই আছেন। অস্ত্রোপচারের আগে জিবরান বাংলাদেশ রেলওয়ের সৈয়দপুর কারখানার ক্যারেজে ফিটার গ্রেড-২ পদে কর্মরত ছিলেন। ট্রেনের নম্বর লিখে কোনো ভাঙাচোরা কিছু আছে কি না, তার তালিকা দেওয়াসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করতে হয় এ পদে।
জিবরান বলেন, আমি যখন মেয়ে ছিলাম, তখনো বাইক চালাতাম। কঠিন কাজ করতে পারতাম। চট্টগ্রামে থাকার সময় রেলের চাকরিতে ক্রেনও চালিয়েছি।

জিবরানের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় শারমিন আক্তার ঝিনুক নামে ২০১২ সালে ট্রেড অ্যাপ্রেনটিস মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি পেয়েছিলেন তিনি।
অস্ত্রোপচারের জন্য ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি কর্মস্থলে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত ছিলেন। অস্ত্রোপচারের পর রেল কারখনায় যোগদান করতে চাইলে করতে পারেননি। দীর্ঘদিন বিনাঅনুমতিতে বাইরে থাকায় তাকে নিয়োগ করা হচ্ছে না। ফলে জিবরান রেল ভবনসহ বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দপ্তরে ঘোরাঘুরি করছেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, শারমিন আক্তার ঝিনুক নারী থেকে পুরুষ হয়েছেন। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তিনি দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। রেল ভবনে তার সব কাগজ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন রেল ভবনের নির্দেশনা অনুযায়ী তার নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে।