চিকলী নিউজ : নীলফামারীর সৈয়দপুরে বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের ভুজারী পাড়ায় ৫ দিন থেকে হদিস নেই সংখ্যালঘু তিনটি পরিবারের। ওই পরিবারের ঘর-বাড়িতে এখন ঝুলছে তালা। তবে গ্রামবাসীর ধারণা প্রায় তিন কোটি টাকা ঋণের চাপে তারা রাতের আঁধারে বাড়ি-ঘর ছেড়ে ভারতে পাড়ি দিয়েছেন। ওইসব পরিবারে শিশুসহ সদস্য সংখ্যা ছিল প্রায় ১৫ জন। গত মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) রাতে ওই তিন পরিবার উধাও হয়েছে বলে লেকমুখে শুনা গেছে।সরেজমিনে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ওই গ্রামের মৃত গনেশ চন্দ্র সূত্রধরের তিন ছেলে কমল চন্দ্র সূত্রধর (৫৬), পরিমল চন্দ্র সূত্রধর (৫২) ও নির্মল চন্দ্র সূত্রধর (৪৮)। এদের মধ্যে বড় ভাই কমল পেশায় একজন দিনমজুর। অন্য দুই ভাই পরিমল ও নির্মল ব্যবসায়ী। তাদের বাড়ির পাশে পোড়ারহাটে পরিমলের মিষ্টির দোকান এবং নির্মলের ধান-চালের পাইকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তারা ব্যবসা করার জন্য ব্র্যাক, আশা, গার্ক এনজিওসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে ঋণ নেয়। ঋণের টাকা পরিশোধে ওইসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি তাগাদা দিলে উল্লেখিত তারিখে ওই তিন ঋণ গ্রহীতা নিজ নিজ বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে উধাও হয়। সেই থেকে ওই পরিবারগুলোর হদিস মিলছে না।
এ সময় কথা হয় প্রতিবেশি গীতা রায় সূত্রধরের সাথে। তিনি জানান, মঙ্গলবার দিনের বেলায় ওই তিন পরিবারের সদস্যরা বাড়িতেই ছিল। কিন্তু পরদিন বুধবার সকালে বাড়িগুলোর প্রধান ফটকে তালা ঝুলতে দেখা যায়। শুনেছি তাদের অনেক দেনা রয়েছে। ওই গ্রামের যুবক রাব্বী ইসলাম জানান, প্রতিদিনই বিভিন্ন পাওনাদাররা তাদের খোঁজে বাড়িতে আসছেন। এদের মধ্যে বিভিন্ন এনজিও লোকজনই বেশি। তিনি আরো জানান, এদের পাকা বাড়িসহ ভিটেমাটি ছাড়া আর কোন সম্পদ নেই। গ্রামের এশাধিক ব্যাক্তি জানান, আমাদের জানামতে, ওই তিন পরিবারের ঋণের পরিমান প্রায় আড়াই থেকে তিন কোটি টাকা হবে। এ সময় আন্তর্জাতিক উন্নয়ণ সংস্থা ব্র্যাকের নীলফামারী সদরের কাজিরহাট শাখার ম্যানেজার সহ কয়েকজন মাঠ কর্মী আসেন তাদের খোঁজে।ম্যানেজার আইয়ুব আলী জানান, তাদের শাখা থেকে নির্মল চন্দ্র সূত্রধর ব্যবসায়ী হিসেবে ৪ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে। যার মাসিক কিস্তি ৩৮ হাজার টাকা। বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জুন জানান, ঋণের চাপে তিন সংখ্যালঘু পরিবার বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি আমি শুনেছি। তারপরও তাদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। এছাড়া শনিবার বিষয়টি সৈয়দপুর থানার ওসিকে মুঠোফোনে অবহিত করেছি।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাটি আমাকে অবগত করেছেন। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যানকে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করার পরামর্শ দিয়েছি।