চিকলী ডেস্ক নিউজ : জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর জাকির হোসেন। অভিযোগে রাজীবপুর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি খাইরুল ইসলাম মণ্ডল ও সাধারণ সম্পাদক বায়েজিদ ইসলাম বিজয়সহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাতে এই লিখিত অভিযোগ করেন প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন নিজেই। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাজীবপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান।
এর আগে সোমবার বিকেলে কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত দলীয় অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য দোয়া চাইতে গিয়ে ‘জান্নাত’ শব্দের স্থলে ‘জাহান্নাম’ বলে ফেলেন। লিখিত অভিযোগে বলা হয়, বিষয়টি তৎক্ষণাৎ বুঝতে পেরে তিনি বাক্য সংশোধন করেন এবং বঙ্গবন্ধুকে শহীদের মর্যাদা দানের জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে সবাইকে দোয়া করার আহ্বান জানান। তাঁর এই বক্তব্যের একটি খণ্ডিত অংশ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে একটি পক্ষ তাঁকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে। সোমবার রাতেই তিনি তাঁর বক্তব্যের ভুল অংশের ব্যাখ্যা দেন এবং দুঃখ প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শোক দিবস উপলক্ষে তিন উপজেলায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়ে কিছুটা ক্লান্তি ছিল। এ জন্য বক্তব্যের সময় ভুলে জান্নাতের স্থলে জাহান্নাম শব্দ বলে ফেলেছি। এটা স্লিপ অব টাং। আমি পরক্ষণেই সরি বলে সঠিক বক্তব্য দিয়েছি। কিন্তু একটি পক্ষ আমার বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করে আমাকে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে। আমি এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানায় জিডি করেছি।’এদিকে সোমবার রাতে দেওয়া একটি ভিডিও বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন তাঁর ভুল বক্তব্যের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এ ভুলের জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থনা করি। আমি বলব হঠাৎ করে মুখ দিয়ে একটা ভুল শব্দ বের হয়ে গেছে। এ জন্য আমি জাতির কাছে, আমার দেশবাসীর কাছে তাৎক্ষণিক ক্ষমা প্রার্থনা করেছি। আপনারা সবাই ক্ষমা করে দেবেন।
প্রতিমন্ত্রীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজীবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাইরুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, ‘উনি (প্রতিমন্ত্রী) বক্তব্যে ভুল বলেছেন। ওই বক্তব্যের কোথাও উনি সরি বলে বক্তব্য সংশোধন করেন নাই। বঙ্গবন্ধু তো বঙ্গবন্ধু। আমরা ছাত্রলীগের কর্মী। তাঁকে (বঙ্গবন্ধুকে) নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করলে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়।’
খাইরুল ইসলাম মণ্ডল আরও বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা আইনগত ভাবে মোকাবিলা করব। যদি আমরা দোষ করে থাকি, ভুল করে থাকি তাহলে আমাদের যা হওয়ার হবে। আমাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় আমরাও মামলা করব।
এ বিষয়ে রাজীবপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। আমরা অভিযোগের বিষয়টি পুলিশের সাইবার তদন্ত বিভাগকে জানানোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। কোন কোন আইডি থেকে প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ প্রচার করা হয়েছে তা শনাক্ত করার পর এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে রাজীবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।