29.6 C
Saidpur

সত্য প্রকাশে সাহসী

শনিবার, মার্চ ১৫, ২০২৫

জিপিএ-৫ বেড়ে ১ লাখ ৮৯ হাজারে

চিকলী ডেস্ক : করোনা মহামারির মধ্যে ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সবাই পাস করেন। ‘অটোপাশের’ বছরে সারাদেশ থেকে জিপিএ-৫ পান ১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন। কিন্তু এবার, সংক্ষিপ্ত পাঠ্যক্রমে ২০২১ সালের ফলের সর্বোচ্চ সূচক জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংখ্যা গতবারের সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর জিপিএ-৫ বেশি পেয়েছে ২৭,৩৬২ জন। অন্যদিকে মহামারির আগে ২০১৯ ও ২০১৮ সালে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পায় যথাক্রমে ৪৭,২৮৬ এবং ২৯,২৬২ জন। তারও আগে ২০১৭ সালে এ সংখ্যা ছিল ৩৭,৯৬৯।
২০২১ সালের এইচএসসি ও সমমানে নয়টি সাধারণ বোর্ড এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডের ১৪ লাখ ৪ হাজার ২৪৪ জন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে মোট পাস করেছে ৯৫.২৬ শতাংশ শিক্ষার্থী; এর মধ্যে এইচএসসিতে পাসের হার ৯৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আর এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৮৮৯ হাজার ১৬৯ জন।
এবার নয়টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৪ লাখ ৩ হাজার ২৪৪ জন। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৮১ জন। পাস করেছে ১৩ লাখ ৬ হাজার ৭১৮ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন। আগের বছরের চেয়ে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২৭ হাজার ৩৬২ জন। জিপিএ-৫ পাওয়ার শতকরা হার এবার ১৩ দশমিক ৭৯।
রবিবার দুপুর পৌনে ১২টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট থেকে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে ফলাফল প্রকাশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর প্রধানমন্ত্রী সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। পরে শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে ফলাফলের সার্বিক বিষয় গণমাধ্যমে তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনের পর সবার জন্য ফলাফল উন্মুক্ত করা হয়। 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল গ্রহণ করেন। 
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫২২ জন সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের (এইচএসসি), ৪ হাজার ৮৭২ জন মাদরাসা বোর্ডের এবং ৫ হাজার ৭৭৫ জন কারিগরি বোর্ডের শিক্ষার্থী।
করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হয়নি, স্বয়ংক্রিয় পাস (অটোপাস) দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। সে বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন।
এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থী ছিল ১১ লাখ ৪০ হাজার ৬৮০ জন। পরীক্ষায় অংশ নেয় ১১ লাখ ১৫ হাজার ৭০৫ জন। পাস করেছে ১০ লাখ ৬৬ হাজার ২৪২ জন। পাসের হার ৯৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫২২ জন।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ১৬৭ জন। পরীক্ষায় অংশ নেয় ১ লাখ ৬ হাজার ৫৭৯ জন। পাস করেছে ১ লাখ ১ হাজার ৭৬৮ জন। পাসের হার ৯৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ৮৭২ জন।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৪৯ হাজার ৩৯৭ জন। পরীক্ষায় অংশ নেয় ১ লাখ ৪৯ হাজার ৩৯৭ জন। পাস করেছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৮ জন। পাসের হার ৯২ দশমিক ৮৫ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ৭৭৫ জন।
কোন বোর্ডে পাসের হার কত : এইচএসসিতে দেশসেরা হয়েছে যশোর শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৯৮.১১ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২০ হাজার ৮৭৮ জন। যশোর বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ জন তবে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ১ লাখ ২৮ হাজার ১৬৩ জন। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ৬৫ হাজার ৭০৬ জন, ছাত্রী ছিলেন ৬২ হাজার ৪৫৭ জন। ছাত্রদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৮ হাজার ৭০৭ জন, ছাত্রীদের মধ্যে ১২ হাজার ১৭১ জন। 
এরপর পাসের হারে এগিয়ে কুমিল­া। এ বোর্ডে ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। এক লাখ ১৪ হাজার ৫৫৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন কুমিল­া বোর্ড থেকে। এর মধ্যে পাস করেছেন এক লাখ ১১ হাজার ৬৮০। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪ হাজার ১৫৩ জন শিক্ষার্থী।
তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে রাজশাহী বোর্ড। রাজশাহী বোর্ডে এবার মোট পাসের হার ৯৭ দশমিক ২৯ শতাংশ। মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ৫০ হাজার ৯১৮ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১ লাখ ৪৩ হাজার ৪৮৯ জন।
পাসের হারে রাজশাহীর পরে অবস্থান ঢাকা বোর্ডের। ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় মোট পাসের হার ৯৬ দশমিক ২০ শতাংশ। মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৩ লাখ ১৫ হাজার ৯৫৭ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ২ লাখ ৯৮ হাজার ৯৭৯ জন। 
পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে বরিশাল বোর্ড। বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ৯৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এ বছর পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ৬৬ হাজার ৭৯৬ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ৩২ হাজার ৫৭ জন এবং ছাত্রী ৩৪ হাজার ৭৩৯ জন। পাস করেছেন ৬৩ হাজার ৯৬৪ জন। ছাত্র ৩০ হাজার ২৮৯ জন আর ছাত্রী ৩৩ হাজার ৬৭৫ জন পাস করেছেন। প্রতিবারের মতো এবারও এই শিক্ষা বোর্ডে ফলাফলে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা পাস ও জিপিএ-৫ এর হারে এগিয়ে। গত বছর বোর্ডে পাসের হার ছিল শতভাগ। এ বছর ৫৬টি প্রতিষ্ঠানে পাসের হার শতভাগ রয়েছে। 
তারপর রয়েছে ময়মনসিংহ বোর্ডের অবস্থান। এ বোর্ডে ৯৫ দশমিক ৭১ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছেন। মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৭০ হাজার ৯৮২ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৬৬ হাজার ২৫০ জন। 
৯৪ দশমিক ৮০ শতাংশ পাসের হার নিয়ে সপ্তম অবস্থানে রয়েছে সিলেট শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪ হাজার ৭৩১ জন। এই বিভাগে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৬৬ হাজার ৬৬১ জন। এর মধ্যে মোট উত্তীর্ণ হয়েছেন ৬৩ হাজার ১৯৩ জন। সিলেট বোর্ডে শতভাগ পাস করেছে ৫৩টি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সিলেটের পরের অবস্থানে রয়েছে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে। এ বোর্ডে পাসের হার ৯২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। দিনাজপুর বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৯৮৬ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১ লাখ ৪ হাজার ৪৮৪ জন। 
পাসের হার সবচেয়ে কম চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে। এ বোর্ডে পাসের হার ৮৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৩ হাজার ৭২০ জন। পাসের হারে ছাত্রীরা এগিয়ে আছেন। ছাত্রী পাসের হার ৯১ দশমিক ৮৫ শতাংশ। ছাত্র পাস করেছে ৮৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এবার পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ৯৯ হাজার ৬২৮ জন। পাস করেছেন ৮৯ হাজার ৬২ জন। 
এছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৯৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ১৩ হাজার ১৬৭ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৭৬৮ জন। 
আর কারিগরীতে পাসের হার ৯২ দশমিক ৮৫ শতাংশ। মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ৪৯ হাজার ৩৯৭ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৮ জন।
উলে­খ্য এবার ২ হাজার ৬২১টি কেন্দ্রে ৯ হাজার ১৮৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ জন পরীক্ষার্থী ছিলেন। এর মধ্যে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১১ লাখ ৩৮ হাজার ১৭ জন। এদের মধ্যে ২ লাখ ৫৪ হাজার ৮৩০ জন বিজ্ঞান, ৬ লাখ ৫৬ হাজার ১৩২ জন মানবিক এবং ২ লাখ ২৭ হাজার ৫৫ জন বাণিজ্য বিভাগের। এছাড়া ১ লাখ ১৩ হাজার ১৪৪ জন মাদ্রাসা ও ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫০৩ জন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষার্থী।

- Advertisement -spot_img

আরও খবর

আপনার মন্তব্য:

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

- Advertisement -spot_img

সদ্যপ্রাপ্ত

জাতীয়