চিকলী ডেস্ক : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ আবারও বাড়তে শুরু করেছে। বৈশ্বিক ও বেপরোয়া চলাফেরার কারণে এই সংক্রমণ বেড়েছে। ওমিক্রন মৃদু এটা ভেবে হালকাভাবে নিলে তা বড় ক্ষতির কারণ হয়ে যাবে।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন আক্রান্ত নিয়ে নতুন তথ্যও দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি জানিয়েছেন, দেশে এখন করোনা আক্রান্তের ৮০ শতাংশেরই ওমিক্রন ধরন।
আজ মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেসরকারি হাসপাতালের প্রস্তুতি নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, দেশে এখন করোনা সংক্রমণের ৭০-৮০ ভাগই ওমিক্রনে আক্রান্ত, যা আশঙ্কাজনক। ওমিক্রন নিয়ন্ত্রণে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তবে জনগণ এগিয়ে না আসলে তা সফল হবে না।
তিনি বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসা রোগীর ৮৫ শতাংশ ভ্যাকসিন নেননি। ঢাকা শহরের সরকারি হাসপাতালগুলো শয্যার ২৫ শতাংশ রোগী ভর্তি রয়েছেন।’
ঢাকায় করোনার চিকিৎসায় সরকারি হাসপাতালে ৪ হাজার শয্যা রয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজারের কিছু বেশি রোগী ভর্তি রয়েছেন। বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫০০ জনের মতো বলে জানান জাহিদ মালেক। যে হারে সংক্রমণ ধরা পড়ছে, তাতে অল্প সময়ের মধ্যে হাসপাতালে শয্যার চাহিদা অনেক বেড়ে যাবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, চাহিদা বাড়লে সংকট দেখা দেয়। এ জন্য আপনাদের আগে থেকেই প্রস্তুত হতে হবে। এখন সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তবে যারা মারা যাচ্ছেন তাদের বেশির ভাগই করোনার টিকা নেননি বলে দাবি করেন মন্ত্রী। বলেন, ‘সংক্রমণ বাড়লেও মৃত্যু সেভাবে বাড়েনি। সে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তির হারও খুব বাড়েনি। এর একটি কারণ, আমার টিকাদান কর্মসূচি ভালোভাবে করতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ডেলটা ভ্যারিয়েন্টকে আমরা সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছি। কিন্তু আমাদের অনেক ঘাটতি ছিল। পর্যাপ্ত অক্সিজেন ছিল না, পর্যাপ্ত শয্যা ছিল না, ডাক্তার-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিজ্ঞতা ও মনোবল কম ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করে আসায় আস্থা, সাহস বেড়ে গেছে। আমরা এখন যে কোনো ঢেউ মোকাবিলা করতে পারি, সে সক্ষমতা আমাদের হয়েছে।
জাহিদ মালেক বলেন, সংক্রমণ যখন কমে এসেছিল, তখন মৃত্যুও শূন্যের কোটায় চলে এসেছিল। আমরা ধারণা করেছিলাম করোনা এবার বিদায় হবে। কিন্তু তখন আমাদের জনগণের মধ্যে অতিমাত্রায় কনফিডেন্স চলে এসেছিল। মাস্ক ছাড়া চলাচল করেছি, কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানিনি। কক্সবাজার যারা গিয়েছে তারা কেউ মাস্ক পরেনি।
তিনি আরও বলেন, যখন সংক্রমণ কমেছে তখন আমরা দেখেছি প্রচুর বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে। হাজার হাজার লোক সেগুলোতে গিয়ে জটলা পাকিয়েছে। কিন্তু তাদের মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব ছিল না। আমরা এখনও দেখছি বাণিজ্য মেলায় খুব কম মানুষই মাস্ক পরছেন। বাজারে খুব কম লোকই মাস্ক পরছেন। এসব কারণেই সংক্রমণ বেড়েছে।