চিকলী নিউজ : নীলফামারীর সৈয়দপুর ছোট্ট একটি শহর। পায়ে হেঁটে প্রায় ১০ মিনিটে এ পুরো শহরটি ঘুরা যায়। যখন অটোর প্রচলন ছিল না তখন প্রায়ই যাত্রীরা ভাড়া নিয়ে হয়রানীর শিকার হত রিক্সা চালকের কাছে। সে সময় রিক্সা শ্রমিক সংগঠনটি ছিল শক্তিশালী। বর্তমানে রিক্সার পাশাপাশি এ শহরে যোগ হয়েছে অটোরিকশা,অটোভ্যান,ব্যাটারী চালিত রিক্সা,ইজিবাইক। এ যানবাহন গুলো ভরে গেছে ছোট্ট এ শহরে। যারা এ গুলোর চালক তারা অনেকেই যাত্রী উঠা নামা ও ট্রাফিক নিয়ম কানুন জানে না। ফলে নিত্যদিন শহরে ঘটে থাকে ছোট, বড় দুর্ঘটনাসহ যানজট। অনেক সময় ওই যানজট সামাল দিতে ট্রাফিক বিভাগকে হতে হয় নাজেহাল। উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় এ যান চলাচলের নিয়ম নিয়ে কথা উঠলেও তা নিয়মের মুখ আর দেখে না।
এ যানগুলো অনেকটা বিপদজনক। সামনে এগুলোতে যে লাইট লাগানো হয়েছে তা রাতের বেলায় আরো বিপদজনক হয়ে উঠে। এ যানের লাইটের আলোয় অন্য যানের চালকরা সামনে অন্ধকার ছাড়া কিছু দেখতে পারে না। ফলে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। বর্তমানে এ যান গুলো নিয়ন্ত্রণে সৈয়দপুরে গঠিত হয়েছে একাধিক সমিতি। সংগঠন বা ওই অটো সমিতির নামে প্রতিদিন অটো চালকদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে অর্থ। এ আদায়কৃত টাকা কোথায় যায় তা সন্দেহাতীত।
চাঁদা আদায় নিয়ে কথা হয় অটো চালক মোমিনের সাথে। তার বাসা শহরের আদানী মোড়ে। বাসটার্মিনাল থেকে সে অটো চালায় শহরের বঙ্গবন্ধু চত্বর পর্যন্ত। তারা কিছু সময় বিরতী রাখে তামান্না সিনেমা হলের সামনে। প্রতিদিন তার কাছ থেকে চাঁদা নেয়া হয় ১০ টাকা করে। হাজারীহাট থেকে অটো নিয়ে এসেছে চালক জামিনুর রহমান। তিনি জানান আমি শহরের বাইরে থেকে এসেছি,তাই আমার কাছে চাঁদা নেয়া হয় প্রতিদিন ২৫ টাকা করে। এ চাঁদার টাকা নেয়ার জন্য তামান্না মোড়ে রয়েছে ৪ জন লোক। একই কথা জানান, অটো চালক আলম,কাল্লুসহ আরও অনেকে।
এদিকে অটো ভাড়া নিয়ে রয়েছে যাত্রীদের নানা অভিযোগ। যাত্রী আশরাফুল হক ও শাহনাজ বেগম বলেন,আমরা শহর থেকে ওয়াপদা পর্যন্ত গেলে ভাড়া নেয়া হয় ৫ টাকা। শহরের মদিনা মোড় থেকে রাবেয়া গেলে ভাড়া ৫ টাকা। কিন্তু বাস টার্মিনাল থেকে বাজার এলাম ভাড়া নেয়া হলো ১০ টাকা। কেন ৫ টাকা বেশী ভাড়া নেয়া হলো তার জবাব দিতে নারাজ চালকরা। আর এ বিষয়গুলো নিয়ে কেউ মাথাও ঘামান না। অটোর ভাড়া কে নির্ধারণ করে থাকেন তাও কেউ বলতে পারেন না। ফলে অটো চালকরা অনেকটা নিজের ইচ্ছে মত যাত্রীদের কাছে ভাড়া নিয়ে থাকে। ভাড়া নির্ধারণ করার কথা পৌরসভা। কিন্তু পৌরসভা শুধু এগুলো চলাচলে লাইসেন্স দিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে সৈয়দপুরে পৌরসভার লাইসেন্স বিভাগ থেকে জানা যায়, তারা প্রতিটি অটোর জন্য ১ বছরে লাইসেন্স ফি নিচ্ছেন ২ হাজার করে টাকা। বর্তমানে শহরে অটোর লাইসেন্স দেয়া হয়েছে ১ হাজারের বেশী।
বনিক সমিতির সভাপতি ইদ্রিস আলী জানান,অটোর একটা নির্দিষ্ঠ ভাড়া নির্ধারণ হওয়া জরুরী। আসলে এ অটোগুলো কারা নিয়ন্ত্রণ ও ভাড়া নির্ধারণ করবে। এ বিষয়গুলো আমরা জানি না। তবে যে হারে শহরে অটো প্রবেশ করছে তাতে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে শহরে তীব্র যানজট সৃষ্টি হতে পারে। তাই শহর যানজট মুক্ত রাখতে এখন থেকে যথাযথ কতৃপক্ষকে নজর দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
অটো ভাড়ার বিষয়ে কথা হয় পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলীর সাথে। তিনিও জানেন না কারা অটোর ভাড়া নির্ধারণ করে থাকেন। যাত্রীর সাথে প্রতিদিন শহর থেকে টার্মিনাল রোডে বাড়তি ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্বের বিষয়টি তারও নজরে পড়েছে।