নীলফামারীর সৈয়দপুরে বিপাকে পড়েছেন ইটভাটার শ্রমিকরা, বন্ধ রয়েছে ইটভাটা। সাম্প্রতি অতিমারী করোনায় কর্মহীন হওয়া শ্রমিকগুলে আবারও কর্মহীন হয়ে পড়েছে। ইট তৈরীর মূল উপকরণ কয়লার দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় যেমন বন্ধ রয়েছে ভাটা অপরদিকে কর্মহীন হয়ে পড়েছে এর সাথে সংশ্লিষ্ঠ শ্রমিকরা।সৈয়দপুর উপজেলায় ২৭টি ইটভাটায় কাজ করে প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক। তাঁরা আজ কর্মহীন হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বড় কষ্টে দিনাতি পার করছেন। এমন পরিস্থিতিতে তারা সস্তায় অগ্রিম শ্রম বিক্রি করে জিবিকা নির্বাহ করছেন।একাধিক শ্রমিক জানায়, শীত মৌসুমের শুরুতেই ইট উৎপাদনে যায় ভাটা মালিকেরা। এজন্য সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ইট তৈরীর প্রক্রিয়া শুরু হয়। অক্টোবর মাসের শেষে ইট পোড়ানোর কাজ শুরুর কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কিছুই করতে পরেননি তারা। ফলে আমরা বর্তমানে বেকার অবস্থায় বসে আছি। কয়লার দাম কমবে এ আশায় ভাটা মালিকরা কালক্ষেপণ করছেন।
সরেজমিনে, উপজেলার বাঙ্গালীপুর, কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধূপুর ও বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে একই চিত্র। বন্ধ রয়েছে ইটভাটাগুলো। কারন হিসেবে দেখা গেছে, আমদানি করা কয়লার অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির বিরূপ প্রভাব পড়েছে স্থানীয় ইটভাটাগুলোতে।এমন পরিস্থিতিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে ১৫ ডিসেম্বরের আগে ভাটা মালিকদের ইট উৎপাদনে না যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এমনটি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইট তৈরী সমিতি নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও এমজেএইচ ব্রিকসের মালিক হারুন-উর-রশিদ।জানা যায়, নীলফামারী জেলায় ৩১টি ইটভাটা মধ্যে সৈয়দপুরে রয়েছে ২৭টি। গেল বছর যে কয়লা টন প্রতি ৯ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, তা বাড়তে বাড়তে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত টন প্রতি ১৩ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়েছে। আবার অক্টোবর মাসে ১৮ হাজার টাকা টনে বিক্রি হলেও বর্তমানে ২২ হাজার টাকা প্রতি টন বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে আশংকায় ইট উৎপাদনে যাচ্ছে না ভাটা মালিকরা। সেইসাথে কর্মহীন হয়েছে শ্রমিকরা।মওসুম শুরু হলেও ইট তৈরীর কাজ শুরু করেনি ভাটা মালিকরা। ফলে ইট সংকটের মুখে সব শ্রেণীর ইটের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে ইটের শ্রেণিভেদে ডের হাজার থেকে দুই হাজার টাকা দাম বৃদ্ধি হওয়ায় স্থানীয় আবাসন খাতসহ উন্নয়ন প্রকল্প কাজের ঠিকাদাররা বিপাকে পড়েছেন।ভাটা মালিকদের অভিযোগ, কয়লার বাজার সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে দফায় দফায় দাম বাড়ছে। ভারত, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও রাশিয়া থেকে আমদানি করা কয়লার দাম সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হচ্ছে। তাই বিনিয়োগ ঝুঁকির আশংকায় ইট উৎপাদনের যাচ্ছেননা তারা।জানতে চাইলে, বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারক সমিতি নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও এমজেএইচ ব্রিকসের মালিক হারুন-উর-রশিদ বলেন, কয়লার মূল্য বৃদ্ধির কারণে ভাটায় ইট উৎপাদনের প্রস্তুতি নিতে পারছি না আমরা। এতে শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে, ভাটা মালিকরাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। ইতোমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা চলছে গ্রিন সংকেত পেলেই উৎপাদনে যাব আমরা।
সৈয়দপুরে ইটভাটা বন্ধ থাকায় বিপাকে শ্রমিকরা
