22.8 C
Saidpur

সত্য প্রকাশে সাহসী

বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০, ২০২৫

নীলফামারীতে শিক্ষার্থীরা প্রকৃতির সাথে লড়াই করে

নীলফামারী :  নীলফামারীর সদর উপজেলার পঞ্চপুকুর শাহপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেহাল দশায় শিক্ষার্থীরা প্রকৃতির সাথে লড়াই করে পাঠদান গ্রহন করছে একযুগ ধরে। ঝড়-বৃষ্টি এলে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার বার্তা শোনাা যাচ্ছে জেলা জুড়ে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদাসিনতায় স্কুল ভবন নির্মাণ না হওয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে অনাঙ্খীত দুর্ঘটনার  আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। ২০০৮ সালে ৩৩ শতক জমির উপর দোচালা টিনশেড দিয়ে পাঠদানে প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পাঁচকক্ষ বিশিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এলাকাবাসি’র স্বেচ্ছাশ্রমে আর সাহায্য-সহযোগিতা গড়ে উঠে। 
২০১৩ সালে বে-সরকারি(রেজিষ্টার্ড) প্রাথমিক এই বিদ্যালয়টি জাতীয় করণের তালিকায় অন্তভুক্ত করে শিক্ষমন্ত্রনালয়। বিদ্যালয়টি জাতীয় করণের পর থেকে সংস্কার ও মেরামতের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। সামান্য ঝড়-বৃষ্টি এলেই স্কুল ঘরটি বাতাসে দোলে আর ফুটো টিনের চালাচুয়ে বৃষ্টি’র পানি শিক্ষক-শিক্ষার্থীর শরীর ও শিক্ষা উপকরণ ভিজে যায় নিমিশে। এ পরিস্থিতির উদায় হলে স্কুল কর্তৃপক্ষ ছুটি’র ঘন্টা হাতে নিয়ে স্কুল ছুটি দিতে বাধ্য হয় পরিস্থিতি সামলাতে। এতে শিক্ষা কার্যাক্রমে ব্যহত হয়ে পড়ে। প্রানঘাতি করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বেহাল দশার এই বিদ্যালয়টি’র সংস্কার-মেরামত নিয়ে তেমন কোন মাথা ব্যাথা ছিলোনা স্কুল পরিচালনা পর্ষদের। গত ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ঘোষনা দেয় সরকার। 
এ ঘোষনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদ শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখে প্রায় সাড়ে তিন শত শিক্ষার্থী নিয়ে পাঠ্যদান কার্যক্রম শুরু করে। নড়বড়ে-জরাজীণ বিদ্যালয়টি আকর্ষিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে কমলমতি শিশুরা অনাঙ্খিত দুর্ঘটনায় অঙ্গহানীসহ  প্রানহানী  আশঙ্কায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অভিভাবকরা। 
অভিবাবক মোরছালিন ইসলাম জানান, বিদ্যলয়ে শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু পাঠদানের পরিবেশে নেই এ বিদ্যালয়ে। নেই বসার বেঞ্চ ও শ্রেণীকক্ষ সংকুলান থাকায় শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়ে বা মাদুর পেতে পাঠদান গ্রহন করছে শারীরিক ও মানুষিক কষ্ট উপেক্ষা করে। 
অভিভাবক জামিয়ার রহমান জানান, টিনশেডের এই বিদ্যালয়টি প্রচন্ড রোদের খরতাপে কমলমতি শিক্ষার্থীরা গরমে হাঁপিয়ে উঠে। এতে অনেক শিক্ষার্থী হিটস্টকে আক্রন্ত হয়ে পাঠদান ফেলে ঘরে ফিরে বাধ্য হয়ে। আর ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠনটি বাতাসে দুলতে থাকে বিদ্যালয়টি নিচু স্থানে গড়ে তোলায় বৃষ্টির পানিতে শ্রেণীকক্ষ গুলো হাটু পানি জমে কাঁদামাটি একাকার হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। বিদ্যালয়টি কয়েকটি বাঁশের খুটির উপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে আল্লাহ’র বিশেষ রহমতে। 
প্রধান শিক্ষক হামিদুল ইসলাম জানান, এই বিদ্যালটি পাকারাস্তার পাশে হওয়ায় কমলমতি শিক্ষার্থীরা যাতায়াত সহজ ও নিরাপদ হওয়ায় এবং শিক্ষা কার্যক্রমে সুনাম অর্জন করায় বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ফলে শ্রেণীকক্ষ সংকুলান থাকায় দুই শিফটে ক্লাস করানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই শিক্ষা মন্ত্রনারয়ের দৃষ্টি আকর্ষন করছি যত দ্রুত সম্ভব স্কুল ভবনটি নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহন করে। সহকারী শিক্ষিকা বাবলী বেগম জানান, এ বিদ্যালয়ে বিশুদ্ধ পানি জন্য গভীর নলকুপ ও স্বাস্থ্যসমত ল্যান্টিন না থাকায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা  চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 
জানতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুজন কুমার কর বলেন, বিদ্যলয়টি’র ভবন নির্মাণের সাইড পরিদর্শন ও বরাদ্দ চেয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। কাজের বরাদ্দ অনুমোদন পেলে  যতদ্রুত সম্ভব বিদ্যলয়ের ভবনটি নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।

- Advertisement -spot_img

আরও খবর

আপনার মন্তব্য:

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

- Advertisement -spot_img

সদ্যপ্রাপ্ত

জাতীয়