চিকলী ডেস্ক নিউজ : শারদীয়া দুর্গাপূজার উৎসবের মধ্যে এবং পরে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে নির্ধারিত এজেন্ডার বাহিরেও সহিংসতার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে সভার বিস্তারিত তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আজকের কেবিনেট মিটিংয়ে এটা পরিষ্কার বলে দেয়া হয়েছে এটা খুব কঠোর অ্যাকশনে যেতে হবে। যারা যারা জড়িত আছে তাদের অবশ্যই ধরতে হবে।
‘পাশাপাশি জনগণকে বলতে হবে যে রিঅ্যাকশন করা যাবে না। কেউ যদি কোরআনের অবমাননা করে কোরআন আমাকে কোনো অথরিটি দেয়নি যে, আমি গিয়ে তার ধর্মের কোনো কিছু ভাঙব। সেটা ঠিক না হোক, আরও বড় অপরাধ হলেও এটা সকলকে খেয়াল রাখতে হবে। ইসলাম ডাজ নট গিভ এনি অথরিটি টু এনি মুসলিম।
খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, ‘আমি প্রতিবাদ করতে পারি, সরকারের কাছে দাবি করতে পারি যে এটা ধরে বিচার করে তাকে শাস্তি দিতে হবে। কিন্তু আমি গিয়ে কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করব, এটা পুরোপুরি আনঅ্যাক্সপেকটেড ইসলামে। এটা হলো ফিতনা। ফিতনা হলো সবচেয়ে বড় অপরাধ।
‘হোম মিনিস্টিারের সঙ্গে আমরা গত কয়েকদিন ধরে এটা হ্যান্ডেল করছি। আজও হোম মিনিস্টারকে বলেছেন, ইন্সট্রাকশন দেয়া হয়েছে টু টেক স্ট্রান অ্যাকশন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যারা এগুলোর সুত্রপাত করল তাদেরকে ধরতে। পাশাপাশি ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যারা আছে তাদের বলা হয়েছে জনগণের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য, এই যে ছোটখাটো কোনো টুইস্টিং কেউ করলে রিঅ্যাকশন করতে পারবে এটা ইসলাম ডাজ নট পারমিট।’
দুর্গাপূজা চলাকালীন ও বিসর্জন শেষে কুমিল্লাসহ দেশের কয়েকটি জায়গায় হিন্দুদের পূজামণ্ডপ, মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়।
গত বুধবার কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘির উত্তরপাড়ের অস্থায়ী পূজামণ্ডপে কোরআন শরিফ পাওয়ার অভিযোগ তোলার পর ওই দিন সকাল থেকে শহরে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয় পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য। তবে আলোচিত মণ্ডপের পূজার আয়োজকরা বলছেন, সেখানে পবিত্র কোরআন শরিফ কী করে এলো সে বিষয়ে তাদের কোনো ধারণা নেই।
কুমিল্লার ঘটনার জের ধরে নোয়াখালীর চৌমুহনী, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মণ্ডপ, মন্দির ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এর মধ্যে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে রোববার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জে রামনাথপুর ইউনিয়নের বাটের হাটে হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়। হামলাকারীরা অন্তত ২৩টি বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স জানিয়েছে, এসব ঘটনায় সোমবার পর্যন্ত ৭১টি মামলা হয়েছে। এতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৫০ জনকে। আরও কিছু মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।