চিকলী ডেস্ক নিউজ : রোহিঙ্গা সংকটের চার বছর পার করলো বাংলাদেশ। এখন প্রত্যাবাসন শুরু করাটাই সরকারের মূল চ্যালেঞ্জ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আন্তরিকতার ঘাটতির কারণেই বিষয়টির সুরাহা হচ্ছে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিনিয়োগ বন্ধ করে মিয়ানমারের ওপর পশ্চিমা বিশ্বের চাপ না বাড়লে সংকট কাটবে না।চার বছরে, একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। ২০১৮ ও ১৯ সালে দু দফায় প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নিলেও তা ব্যর্থ হয়।
এখন, করোনা মহামারি ও মিয়ানমারের রাজনৈতিক অস্থিরতার দোহাই দিয়ে প্রস্তুতি বন্ধ রেখেছে নেপিদো। তবে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আন্তরিকতার ঘাটতিকে দায়ী করছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন, চীনের মধ্যস্ততায়, প্রত্যাবাসন ইস্যুতে মিয়ানমারের নতুন সরকারের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ।
প্রত্যাবাসনের পরিবেশ তৈরি করতে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানোর তাগিদ বিশ্লেষকদের। তারা বলছেন, রোহিঙ্গা সমস্যাটি জিইয়ে রেখে পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনির মনে করেন, মানবিক কারণে আশ্রয় দেয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এ সমস্যা যত দীর্ঘায়িত হবে তত সারাদেশে রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়ার শংকা বাড়বে।
২০১৭ সালে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। বর্তমানে দেশে অবস্থান করছে ১১ লাখের বেশি। মানবিক বিবেচনায় তাদের আশ্রয় দেয়া হলেও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন অনেক রোহিঙ্গা। তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন করা না গেলে চরম মূল্য দিতে হবে, আশঙ্কা স্থানীয়দের।
গেল এক বছরে উখিয়া ও টেকনাফে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হয়েছে অন্তত ১২ বাংলাদেশি। রোহিঙ্গাদের কাছে কোনঠাসা হয়ে পড়ছে স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের আশঙ্কা, রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে ফেরাতে না পারলে পরিণতি হবে ভয়াবহ। রোহিঙ্গাদেরও সাফ কথা, সম্মানের সঙ্গে না নিলে মিয়ানমারে ফিরে যাবে না তারা। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দ্রুত শুরু করতে ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ স্থানীয়দের।